কানাডায় আদিবাসী স্কুলে ১৮২ কবর - ছবি:আল জাজিরা

কানাডায় আদিবাসী স্কুলে মিলল আরও ১৮২ কবর

ডেস্ক : আঠারো-উনিশ শতকে কানাডা সরকার ও রোমান ক্যাথলিক চার্চের যোগসাজশে আদিবাসীদের সঙ্গে হওয়া বর্বর আচরণের অধ্যায় ক্রমেই উন্মোচিত হচ্ছে। আদিবাসী সন্তানদের আধুনিক সমাজে খাপ খাওয়ানোর নামে জোরপূর্বক আবাসিক স্কুলে রাখার যে উদ্যোগ নিয়েছিল তৎকালীন সরকার, তার ফলাফল হয়েছিল ভয়াবহ। স্কুলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায় কয়েক হাজার শিশু। পরে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হলেও কৌশলে চাপা পড়ে যায় আদিবাসী শিশুমৃত্যুর বিষয়টি। তবে সম্প্রতি ওই ধরনের বেশ কয়েকটি স্কুলে কয়েকশ’ কবরের সন্ধান পাওয়ার পর এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

সবশেষ এ তালিকায় যোগ হয়েছে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ক্র্যানব্রুক এলাকার কাছাকাছি সেন্ট ইউজেনস মিশন স্কুল। বহু বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলটির প্রাঙ্গণে ১৮২টি কবর খুঁজে পেয়েছেন অনুসন্ধানকারীরা।

লোয়ার কুটানি ব্যান্ড নামে একটি আদিবাসী সংগঠন বুধবার জানিয়েছে, তারা মাটির নিচে অনুসন্ধানযোগ্য রাডার ব্যবহার করে স্কুলটির জায়গায় ৭ থেকে ১৫ বছর বয়সী শতাধিক শিশুর দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছে।

ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল হিস্ট্রি অ্যান্ড ডায়ালগ সেন্টারের তথ্যমতে, স্কুলটি ১৮৯০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। এটি ক্যাথলিক চার্চের অধীনে পরিচালিত হতো। সেখানে আদিবাসী শিশুদের রেখে শিক্ষা দেয়ার কথা বলা হয়েছিল।

১৮ থেকে ১৯ শতকে এ ধরনের অন্তত ১৩৯টি বোর্ডিং স্কুল চালু করেছিল কানাডা সরকার। ধারণা করা হয়, ওইসব আবাসিক স্কুলে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া, শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই পালিয়ে গিয়েছিল। পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।

গত বছর এ ধরনের স্কুলগুলোতে কবর অনুসন্ধানের কাজ শুরু হয়। গত মাসে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে ২১৫টি কবরের সন্ধান পাওয়া যায়। গত সপ্তাহে সাসকাচেওয়ানে ম্যারিভাল স্কুলে পাওয়া যায় ৭৫১টি কবর। এগুলোর কোনোটিতেই কবরের নাম-নিশানা ছিল না, অর্থাৎ কোনো একসময় সেগুলো নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

এসব আবিষ্কারের পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা সরকার ও ক্যাথলিক চার্চের ওপর দায় স্বীকারের জন্য চাপ বাড়ছে। আদিবাসী নেতারা পোপ ফ্র্যান্সিসকে ক্ষমা চাওয়া এবং স্কুলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া স্কুলে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দিতে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা

আরো খবর ➔
করোনায় কাজ হারিয়ে ইউটিউবার, ছ’মাসের আয় পাঁচ লাখ টাকা!