২৯ বছর পর জ্ঞান ফিরেই ১৩০ কোটির মালিক!

ডেস্ক : জীবন বড়ই বিচিত্র। কেউ মুহূর্তে সব খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে যান কেউ আবার রাতারাতি কোটিপতি! আগামী দিন কার ভাগ্য কোন দিকে মোড় নেবে তা কেউই বলতে পারে না। দিল্লির এক ব্যক্তির সঙ্গে এমনই এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছিল যা প্রত্যক্ষ করেছিল সারা দেশ। ২৯ বছর কোমায় থাকার পর সুস্থ হয়ে উঠে তিনি জানতে পেরেছিলেন ১৩০ কোটি টাকার মালিক হয়ে গিয়েছেন তিনি!

কী ভাবে তা সম্ভব হয়েছিল? ২০১৯ সালের ঘটনা। শেয়ার বাজার সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে টেলিভিশন চ্যানেল-এ একাধিক অনুষ্ঠান হত। তাতে দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হাজির থাকতেন বিশেষজ্ঞরা।

নিজের কেনা কিছু শেয়ারের সম্পর্কে জানতে তিনি এমনই একটি চ্যানেল-এ ফোন করেছিলেন। তার পরই জানতে পারেন যে তাঁর সেই শেয়ারগুলির বাজারমূল্য তখন ১৩০ কোটি টাকা। দিল্লির বাসিন্দা ওই ব্যক্তি আসলে এমআরএফ-এর ওই শেয়ারগুলি কিনেছিলেন ১৯৯০ সালে।

শেয়ার কেনার কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর জীবনে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। দিল্লির রাস্তায় মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন তিনি। চিকিৎসায় তিনি প্রাণ ফিরে পান, কিন্তু তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ করতে পারেননি চিকিৎসকরা।

সেই ১৯৯০ সাল থেকেই তিনি কোমায় চলে যান। তার পর ঘরের একটি বিছানায় শুয়ে কেটে গিয়েছে জীবনের ২৯টি বছর। এই ২৯ বছর সন্তানরা তাঁর পাশে ছিলেন। তাঁর চিকিৎসায় কোনও খামতি রাখেননি। এর মাঝে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয়েছে, নাতি-নাতনিও হয়ে গিয়েছে।

সব মিলিয়ে ২৯ বছরে অনেক বদলে গিয়েছিল তাঁর চারপাশ। তার পর এক দিন হঠাৎই তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন। পরিবার-পরিজনদের নতুন করে চিনতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর সামনে তখন নতুন বিশ্ব। সব কিছুই যেন বদলে গিয়েছিল। নতুন পরিবেশের সঙ্গে একটু একটু করে মানিয়েও নিলেন। নাতি রবির সঙ্গে দাদুর বেশ বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছিল।

নাতির কাছেই একদিন তিনি ২৯ বছর আগের স্মৃতিগুলি এক এক করে বলে যাচ্ছিলেন। কথা প্রসঙ্গে তাঁর মনে পড়ে যায় এমআরএফ-এর শেয়ারের কথা। দুর্ঘটনার ঠিক আগে যেগুলি কিনেছিলেন তিনি। খুব কম দামে এমআরএফ-এর ২০ হাজার শেয়ার কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু শেয়ারের কাগজপত্র কোথায় রেখেছিলেন মনে করতে পারছিলেন না। তার পর দাদু-নাতি দু’জনে মিলে খুঁজে বার করেছিলেন সেই কাগজপত্রগুলিও। কিন্তু এত পুরনো শেয়ার কি আদৌ এখন বিক্রি করা যাবে?

নাতি রবিই এক দিন দাদুকে পাশে নিয়ে ওই টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ফোন করেন। সব ঘটনা তিনি খুলে বলেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল এগুলি আদৌ বিক্রি করা যাবে কি না, আর গেলে কী উপায়ে সেগুলি বিক্রি করা যাবে। বিশেষজ্ঞরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, প্রথমে দাদুর নামে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তার পর সেখানে এই শেয়ারগুলিকে নিয়ে আসতে হবে। তবেই তিনি শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। এর পরই অনুষ্ঠানে হাজির আর এক বিশেষজ্ঞ তাঁকে হিসাব কষে জানিয়ে দেন যে, ওই ২০ হাজার শেয়ারের বাজার মূল্য সে সময় ১৩০ কোটি টাকা!

অনুষ্ঠানের এই অংশটুকু রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। ভিডিয়োর ওই অংশটুকু সেই ২০১৯ সাল থেকেই নেটমাধ্যমে ঘুরছে। এখনও অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক কিংবা টুইটারে ভিডিয়োটি দেখতে পান। এর পর ওই ব্যক্তি কী করেছিলেন? টাকা উদ্ধার করতে পেরেছিলেন? না কোমা থেকে ফিরে ১৩০ কোটির মালিক হয়ে তাঁর ফের কোমায় যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কি না তা অবশ্য জানা যায়নি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

আরো খবর ➔
তামিমের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি