হিংস্র বা ঘৃণাত্মক বক্তব্য, সহিংস ছবি, সন্ত্রাসবাদ এবং যৌনতা নিয়ে নীতিমালা অমান্য করায় ৩ মাসে ২.৯ কোটি পোস্ট সরিয়ে নিয়েছে বা পোস্টদাতাকে সতর্ক করেছে ফেসবুক। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মে) প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়, তিন মাসে মাত্র ৩৮ শতাংশ ঘৃণাত্মক বক্তব্যের পোস্ট শনাক্ত করতে পেরেছে অ্যালগরিদম। বাকি ৬২ শতাংশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে গ্রাহক অভিযোগের ভিত্তিতে। অন্যদিকে ইসলামিক স্টেট, আলকায়েদা এবং অন্যান্য চরমপন্থি সংগঠনকে সমর্থন করে ছড়ানো ৯৯.৫ শতাংশ পোস্ট শনাক্ত করতে পেরেছে টুল। বাকি শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ পোস্ট শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি করেছে ফেসবুক।
জানা যায়, বছরের প্রথম তিন মাস ১৯ লাখ চরমপন্থি উপাদান সরিয়েছে, যা আগের প্রান্তিকের চেয়ে ৭৩ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে ঘৃণাত্মক বক্তব্য মারাত্মকভাবে বেড়েছে ১৮৩ শতাংশ। বছরের প্রথম প্রান্তিকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য বিষয়ক ২৫ লাখ পোস্ট সরিয়েছে ফেসবুক, যা আগের বছরের আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৫৬ শতাংশ বেশি। আরো ভালো শনাক্তকরণ প্রযুক্তির মিশ্রণ এবং সিরিয়ায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা বাড়ায় এমনটা হতে পারে বলে জানিয়েছে ফেসবুক।
প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্যে আরো দেখা গেছে, আগের তিন মাসের চেয়ে জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে প্লাটফর্মটিতে সহিংস ছবি এবং নগ্নতার পরিমাণ বেড়েছে। ফেসবুকের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, তাদের ধারণা তিন থেকে চার শতাংশ সক্রিয় গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট ভুয়া। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৫৮.৩ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট সরানো হয়েছে বলেও জানানো হয়।
এদিকে ফেসবুকে কোনো ধরনের পোস্টগুলো এড়িয়ে যাওয়া হতে পারে তা বের করতে এলোমেলোভাবে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকে প্রকাশ করা অনির্দিষ্ট সংখ্যক পোস্ট নেওয়া হয়েছে এবং পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে কয়বার একটি উপাদান তাদের নীতিমালা অমান্য করছে। এতে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা যথেষ্ট জটিল বলেও উল্লেখ করা হয় বিবিসির প্রতিবেদনে।
নমুনা অনুসারে প্রতি ১০ হাজার পোস্টের মধ্যে ২৭টি পোস্টে কোনো না কোনো ধরনের সহিংস ছবি থাকে। এই হিসাবে দৈনিক সক্রিয় দেড়শ’ কোটি গ্রাহকের প্লাটফর্মটিতে প্রতিদিন কোটি কোটি পোস্ট অনিয়ন্ত্রিতভাবেই থেকে যাচ্ছে। একই কৌশল ব্যবহার করে দেখা গেছে প্রতি ১০ হাজার পোস্টের মধ্যে সাত থেকে ৯টি পোস্ট থাকে যেগুলোতে নগ্নতা বা যৌন উপাদান রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার মডারেটরকে সহায়তা করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক টুলও বানাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের সফটওয়্যার এসব হয়রানি শনাক্ত করতে জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে। এদিকে নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে কী পরিমাণ চেষ্টা করা হয়েছে এবারই প্রথম তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে ফেসবুক।
সুত্র: বিবিসি