ছবি : ইন্টারনেট

নারীর মস্তিষ্ক ছোট হলেও কর্মক্ষমতার পার্থক্য নেই

ছবি : ইন্টারনেট

নারীদের মস্তিষ্কের আকার পুরুষের মস্তিষ্কের চাইতে কিছুটা ছোট। এ কারণেও নারীর চিন্তা ও কাজের ধরন পুরুষের চাইতে ভিন্ন হতেই পারে। তবে গবেষকদের দাবি, নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের আয়তনের পার্থক্য সবচেয়ে স্পষ্ট। তবে পুরুষদের মস্তিষ্ক নারীদের তুলনায় বড় বলে যে সেটি আরো দ্রুত বা আরো উন্নতভাবে চলে, এমন কোনো প্রমাণ নেই।

জার্মানির ইয়ুলিশ শহরে হেল্মহলৎস গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকদের দাবি, দুই লিঙ্গের মস্তিষ্কের কাজের বা সামর্থ্যের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য নেই।

এ বিষয়ে গবেষক দলের প্রধান ড. সুসানে ভাইস জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে বলেন, ‘পুরুষ ও নারীর মস্তিষ্কের মধ্যে একটি পার্থক্য অত্যন্ত স্পষ্ট। আর সেটি হলো আকার। সুসানে বলেন, দুই লিঙ্গের মধ্যে নয়, বরং একই লিঙ্গের মধ্যে বেশি পার্থক্য পাওয়া যায়। এর আগে নানা গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, নারীরা পুরুষের চাইতে দক্ষভাবে ভাষা শিখতে পারেন বা পুরুষদের ‘স্পেশাল’ বা স্থান সংক্রান্ত জ্ঞান বেশি। অর্থাৎ পুরুষরা দিকনির্দেশনা সহজে বোঝেন ও চেনেন। ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় দাবি করা হয়, মস্তিষ্কের বাম ও ডান অংশের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় দ্রুত ঘটে। অন্যদিকে পুরুষের মস্তিষ্কের সামনে ও পেছনের অংশের মধ্যে সংযোগ তুলনামূলকভাবে নারীদের চাইতে শক্তিশালী। আর ২০১৭ সালের এক গবেষণায়ও একই দাবি করা হয়েছে।

কিন্তু ড. সুসানে ভাইস আগের দুই গবেষণা মানতে নারাজ। তার দাবি এমন বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ২৫ অথবা ১০০ জনের স্যাম্পল থেকে সার্বিক চিত্র পাওয়া যায় না। তাহলে কি আচরণের মধ্যে পার্থক্য মানুষ জন্মের পর শিক্ষাদীক্ষার মাধ্যমে আয়ত্ত করে? সুসানের বক্তব্য, এমনটাও হলফ করে বলা যায় না। মস্তিষ্কের কাণ্ডের সবচেয়ে পুরনো অংশে গঠনগত পার্থক্য রয়ে গেছে। সেখানেই ‘মিডিয়াল প্রিঅপটিক নিউক্লিয়াস’ নামের কয়েক মিলিমিটার চওড়া পরিচালন কেন্দ্র রয়েছে। সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর পুরুষের মস্তিষ্কে এই অংশটি অপেক্ষাকৃত বড়। মানুষের ক্ষেত্রে তা দ্বিগুণ।

এই স্নায়বিক কেন্দ্র কর্তৃত্ব, আগ্রাসী মনোভাব ও যৌন আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এগুলো পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত, নারীদের ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন। আমাদের আচরণেই তার প্রতিফলন দেখা যায়। যেমন সম্পর্কের বন্ধনের বাইরে যৌন সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি। পুরুষদের মধ্যে শারীরিক শক্তি প্রয়োগ করে আগ্রাসী মনোভাবের প্রকাশও বেশি দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একই লক্ষ্য পূরণ করতে পুরুষ ও নারীরা আলাদা কৌশল প্রয়োগ করেন। তবে গবেষকরা এখন পর্যন্ত যেটি জেনেছেন তাতে, এই তফাতটি হয় যতটা না জিনগত কারণে তার চাইতে বেশি সামাজিকীকরণ ও সংস্কৃতির কারণেই হয়ে থাকে।

সুত্র: ডয়েচে ভেলে

আরো খবর ➔
পর্নকাণ্ডে মুখ খুললেন সোফিয়া